রাইনাইটিস মেডিকামেনটোসাঃ কি, কেন ও কিভাবে?
রোগীরা ডাক্তারের কাছে সাধারনত আসে ঔষধ নিতে, আর সেদিন চেম্বারে এক রোগী এসেছে ঔষধ বন্ধ করতে!!! ঔষধটা ছিল নাকের ড্রপ। উনার রোগটার নাম রাইনাইটিস মেডিকামেনটোসা (rhinitis medicamentosa) ।
যাদের নাক বন্ধ থাকার কারনে শ্বাস নিতে কষ্ট হয় তারা সচরাচর নাকের ড্রপ (এন্টাজল/ আফ্রিন) ব্যবহার করে থাকেন। যারা দীর্ঘদিন ধরে নিয়মিত নাকের ড্রপ ব্যবহার করেন তারা একপর্যায়ে গিয়ে ঐ ড্রপের উপর নির্ভরশীল হয়ে যান,ঐ ড্রপ ছাড়া চলাটাই মুশকিল হয়ে যায়,যদিও একটা সময় ঐ ড্রপ নিজেই নাক বন্ধ হওয়ার এবং নাকের ভেতরে প্রদাহের (রাইনাইটিস) কারন হয়ে যায়। এই অবস্থার নাম রাইনাইটিস মেডিকোমেনটোসা।
কেন এটি হয় হয় ?
নাকে ড্রপ (এন্টাজল,আফ্রিন ইত্যাদি) যদি নিয়মিত টানা ১০ দিন বা তার বেশি ব্যবহার করা হয় তাহলে এই নির্ভরশীলতা তৈরি হয়। কারো কারো ক্ষেত্রে ৩ দিন এর বেশি, আবার কারো কারো ক্ষেত্রে ৬ সপ্তাহ ব্যবহার করার পর এই পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে।
দীর্ঘদিন নাকের ড্রপ ব্যবহারের কারনে যে সমস্যা হয় তা হল:
- দীর্ঘমেয়াদী নাক ও সাইনাসের প্রদাহ
- এট্রফিক রাইনাইটিস: নাকের ভেতরের অংশ শুকিয়ে যায় যার কারনে নাকে ময়লা জমে, বদ্ধভাব লাগে, নাক দিয়ে রক্ত পড়ে এবং নাক দিয়ে প্রচন্ড দুর্গন্ধ বের হয় যা অন্যরা পেলেও রোগী নিজে বুঝতে পারেনা।
- নাকের মাংসবৃদ্ধি।
- হঠাত ড্রপ বন্ধ করে দিলে মাথাব্যথা, ঘুম কম হওয়া, অস্তিরতা, এই সমস্যাগুলি হয়।
কিভাবে এটি প্রতিরোধ করা যায় ?
এই পরিস্থিতি থেকে বাঁচার একটাই পথ,আর সেটা হল কোন অবস্থাতেই নাকের ড্রপ টানা ৫ থেকে ৭ দিনের বেশি ব্যবহার না করা।
চিকিৎসা কি ?
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরন সম্ভব, যদিও একটু জটিলতা রয়েছে। আর সেজন্য প্রয়োজন যথাযথ চিকিৎসা, যেখানে ধীরে ধীরে এই ড্রপ বন্ধ করে দিয়ে, নাক বন্ধের কিছু বিকল্প স্প্রে/ঔষধ ব্যবহার করতে হয়।
#সবাই সুস্থ থাকুন, ভাল থাকুন এই কামনা করি।
#মাস্ক_পড়ুন।
#সামাজিক_দুরত্ব_বজায়_রাখুন।
ডাঃ মাহমুদ উল্লাহ্ ফারুকী
ডাঃ মাহমুদ উল্লাহ্ ফারুকী ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে (কে-৬২) এমবিবিএস এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এস পাশ করেন। বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের এই কর্মকর্তা বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নাক, কান ও গলা রোগ বিশেষগ এবং হেড-নেক সার্জন হিসেবে কর্মরত আছেন।